Wellcome to National Portal
বাংলাদেশ পরমাণু কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার
Text size A A A
Color C C C C

সর্ব-শেষ হাল-নাগাদ: ১৭ অক্টোবর ২০২৪

বিনাধান-৮

 

জাতের নামঃ

বিনাধান-৮

জাতের বৈশিষ্ট্যঃ

একটি লবন সহিষ্ণু, উচ্চ ফলনশীল, আলোক অসংবেদনশীল ও উন্নত গুনাগুন সম্পন্ন বোরো ধানের জাত।

 জীবনকাল ১৩০-১৩৫ দিন।

কুশি অবস্থা থেকে পরিপক্কতা পর্যন্ত ৮-১০ ডিএস/মিটার এবং চারা অবস্থায় ১২-১৪  ডিএস/মিটার মাত্রার লবণাক্ততা সহনশীল।

জমি ও মাটিঃ
দেশের লবণাক্ত ও অলবণাক্ত উভয় এলাকায় এ জাতটি চাষের উপযোগী। তবে অলবণাক্ত এলাকায় ফলন কিছুটা বেশি পাওয়া যায়। বেলে দো-আঁশ এবং এটেল দো-আঁশ জমি এ জাতটি চাষের উপযোগী।
জমি তৈরীঃ
জাতটির চাষাবাদ পদ্ধতি অন্যান্য উফশী রোপা বোরো জাতের মতই। 
বপণের সময়ঃ
এ জাতের বীজ নভেম্বর মাসের ১ম সপ্তাহ হতে শুরু করে ২য় সপ্তাহ পর্যন্ত বীজতলায় ফেলার উপযুক্ত সময়। পাঁচ শতাংশ (২০০ বর্গ মিটার) পরিমাণ বীজতলায় ১০ কেজি বীজ ফেলা যায়।
বীজ হার ঃ
প্রতি হেক্টর জমি চাষের জন্য ২৫-৩০ কেজি বা এক একর জমির জন্য ১০-১২ কেজি বীজ প্রয়োজন হয়।
বীজ শোধনঃ
উপযুক্ত ফলন নিশ্চিত করতে হলে পুষ্ট ও রোগবালাই মুক্ত বীজ ব্যবহার করতে হবে। প্রতি ১০ কেজি বীজ শোধনের জন্য ২৫ গ্রাম ভিটাভ্যাক্স-২০০ ব্যবহার করলে ভাল হয়।
সার ও প্রয়োগ পদ্ধতিঃ

প্রতি হেক্টরেঃ

বীজতলার জন্যঃ

উর্বর ও স্বল্প উর্বর জমিতে বীজতলা তৈরী করলে কোন রূপ সার প্রয়োজন হয়না। অনুর্বর ও স্বল্প উর্বর জমিতে কেবল দুই কেজি পঁচা গোবর বা আবর্জনা সার প্রয়োগ করলেই চলে। চারা গজানোর পর গাছ হলুদ হয়ে গেলে দু’সপ্তাহ পর প্রতি বর্গ মিটারে ৭ গ্রাম ইউরিয়া সার উপরি  প্রয়োগ করতে হবে। ইউরিয়া সার উপরি প্রয়োগের পর জমি থেকে পানি নিষ্কাশণ করা যাবেনা।

রোপা ক্ষেতেরজন্যঃ

ইউরিয়াঃ  ২১০-২৩০  কেজি, টিএসপিঃ ১১০-১২০ কেজি, এমওপিঃ ৬০-৮০  কেজি, জিপসামঃ ৪৫-৫০ কেজি ও দসত্মাঃ ৪.০-৪.৫ কেজি।

প্রয়োগের নিয়মঃ

রোপার জন্য জমি তৈরীর শেষ চাষের আগে সম্পূর্ণ টিএসপি এবং এমওপি জমিতে সমভাবে ছিটিয়ে চাষের মাধ্যমে মাটির সাথে ভালভাবে মিশিয়ে দিতে হবে। ইউরিয়া সারের অর্ধেক পরিমাণ চারা রোপনের ৭-৮ দিন পর এবং বাকি অর্ধেক ২০-২৫ দিন পর জমির উর্বরতার উপর নির্ভর করে প্রয়োগ করতে হবে। ইউরিয়া সার প্রয়োগের ২/১ দিন আগে জমির অতিরিক্ত পানি বের করে দিতে হবে এবং প্রয়োজন হলে আগাছা দমন করতে হবে। জমির উর্বরতা ও ফসলের অবস্থার উপর নির্ভর করে ইউরিয়া সার প্রয়োগমাত্রার তারতম্য করা যেতে পারে। মনে রাখতে হবে টিএসপি ও দসত্মা সার একই সাথে প্রয়োগ করা যাবেনা। তাই এক্ষেত্রে এক চাষ পূর্বে টিএসপি প্রয়োগ করতে হবে এবং শেষ চাষের সময় ইউরিয়া ছাড়া অন্যান্য সার ছিটিয়ে প্রয়োগ করা অবশ্যক।

সেচ ও নিষ্কাশনঃ
জমি তৈরীর সময় ২/৩ বার স্বাদু পানি দিয়ে লবণাক্ত পানি বের করে দিলে জমির লবণাক্ততা অনেকটা কমে যায়। তাছাড়া কুশি, ফুল আসা ও পরিপক্কতার সময় লবণের মাত্রা ১০ ডিএস/মিটারের বেশী হলে স্বাদু পানি দিয়ে লবণাক্ততা কমিয়ে আনতে হবে। ধান পাকার ১০-১২ দিন আগে জমির পানি শুকিয়ে ফেলা ভাল।
আগাছা দমন ও মালচিংঃ
চারা রোপনের পর আগাছা দেখা দিলে নিড়ানী বা হাতের সাহায্যে আগাছা পরিষ্কার এবং মাটি নরম করতে হবে ।
বালাই ব্যবস্থাপনাঃ

এ জাতগুলোর রোগ বালাই ও পোকামাকড়ের আক্রমণ কম হয়। তবে প্রয়োজনে বালাইনাশক প্রয়োগ করা উচিত। খোল ঝলসানো বা সিথ্বস্ন­াইট রোগ দেখা গেলে ফলিকুর বা প্রোপিকানাজল (টিল্ট ২৫০ ইসি) ১ মি. লি. বা ব্যাভিস্টিন ১ গ্রাম প্রতি লিটার পানিতে মিশিয়ে স্প্রে করতে হবে। এছাড়া ব­াষ্ট রোগ দমনের জন্য ট্রুপার একর প্রতি ১৫০ মিলি হারে ২০০ লিটার পানিতে স্প্রে করা যেতে পারে।

পোকামাকড় দমনের জন্য আইপিএম পদ্ধতিই সবচেয়ে ভাল। এ জাতটি মাজরা পোকার প্রতি মধ্যম প্রতিরোধ ক্ষমতা সম্পন্ন। জমিতে মাজরা পোকা, পাতা শোষক পোকা, ফড়িং বা অন্যান্য পোকার আক্রমণ হলে ডায়াজিনন-১০ (দানাদার) একর প্রতি ৬.৮ কেজি হারে ছিটিয়ে ব্যবহার করা যেতে পারে বা সবিক্রন ৪২৫ ইসি ২০ মি.লি.  ১০লিটার পানিতে মিশিয়ে ২০০ বর্গ মিটার (৫ শতাংশ) জমিতে স্প্রে করা যেতে পারে। রোগবালাই ও কীট পতঙ্গের আক্রমণ দেখা দিলে নিকটস্থ কৃষিসম্প্রসারণ কর্মকর্তার উপদেশ মোতাবেক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে হবে।

হেক্টর প্রতি ফলনঃ
লবণাক্ত জমিতে গড় ফলন ৫.০-৫.৫ টন/হেঃ (বোরো মৌসুম) এবং অলবণাক্ত স্বাভাবিক জমিতে গড় ফলন ৭.৫-৮.৫ টন/হেঃ (বোরো মৌসুম)

 

প্রয়োজনে সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞের সাথে কথা বলুন ধান ফসল বিশেষজ্ঞ

(সকাল ৯ টা-বিকাল ৫টা)

কল করুনঃ +৮৮০১৭১৬২৮০৭২১
ই-মেইলঃ sbluna98@yahoo.com.com
দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তার নাম ও পদবী
ড. শামছুন্নহার বেগম
মুখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা
উদ্ভিদ প্রজনন বিভাগ, বিনা, ময়মনসিংহ-২২০২

 

 চিত্র: বিনাধান-৮ এর মাঠ